মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে ইট ভাটাগুলোতে অবাধে পুড়ানো হচ্ছে ফসলি জমির মাটি, কৃষি উৎপাদন ঝুঁকিতে। ফসলি জমির উর্বরা শক্তি মাটি দিয়ে ব্যবহার করে ইট তৈরি করছেন ইটভাটা মালিকেরা । ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার কারনে জমির উর্বরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে ।যে কারনে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বারবার বারণ করা সত্বেও ইটভাটা মালিকরা ফসলি জমির মাটি ব্যবহার করে ইট বানাচ্ছেন। এব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা উর্বর ভূমি কমে যাওয়ার বিষয়টি জানলেও কেন যে নীরবতা পালন করছেন তা বোধগম্য নয় । পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, যে সকল ভাটা মালিকগণ ফসলি জমির মাটি ব্যবহার করছেন তাদের বিষয়ে সুস্পষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইট তৈরির জন্য প্রায় ৯০ ভাগ ইট ভাটা মালিকগন স্থানীয়ভাবে ফসলি জমির মাটি ক্রয় করে থাকেন। দেশীয় মাটি কাটার কোদালের মাপে ১ কোপ মানে প্রায় ১২ইঞ্চি করে মাটি কেটে আনা হয় ফসলি জমির উপরিভাগ থেকে। কেটে নেয়া মাটি কৃষি জমির একেবারে উপরের অংশ যাকে টপ সয়েল বলে। জমির টপ সয়েল কেটে নেয়ার ফলে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে ফসলি জমিগুলো। এ কারণে প্রতি বছরই কমছে ফসল উৎপাদন। টপ সয়েল বিক্রিকারী জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি বিক্রির সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও ভাটা মালিকরা বলছেন, জমির মালিকরা জেনেশুনেই মাটি বিক্রি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটা কর্মচারী বলেন, টপ সয়েল ব্যতীত ইট তৈরী সম্ভব না। জমির উপরিভাগ হতে এক কোদাল করে যে মাটি কেটে আনা হয় সেই মাটি দিয়ে ভালো ইট তৈরী হয় । এর পর যত নীচে যাবেন ততনীচে বালি পাওয়া যাবে যা দিয়ে কোন ভাবেই ইট তৈরী সম্ভব নয়। মাটি ব্যতীত ইট তৈরী বিকল্প কাঁচামাল না থাকার কারনে আমাদেরকে জমির মাটি কিনতে হচ্ছে উপজেলার ৫নং শ্রীধরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ নাসির উদ্দীন জানান, ইটভাটায় ফসলি জমির উর্বর মাটি ব্যবহার বন্ধে ইটভাটার মালিকদের বারবার বারণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব কথা তারা কর্ণপাত করেননি ইটভাটার মালিকরা । অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানী বলেন, ফসলি জমির উর্বরাশক্তি মাটি ব্যবহার করলে স্বাভাবিক ভাবেই সেই জমিতে ফসল উৎপাদন কম হয়। তাই ইটভাটায় ফসলি জমির উর্বর মাটি ব্যবহারে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইটভাটাগুলোতে দ্রুত উর্বর মাটি ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।