চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘইল মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত শহীদ আলী ফকিরের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বাবুর খামারে রয়েছে একটি বড় আকারের ষাঁড় গরু। আদর করে নাম রাখা হয় ‘স্বপ্নরাজ’। চার বছর ধরে লালন পালন করছেন তিনি। খামারী বাবুর দাবি, ছয় দাঁতওয়ালা গরুটির ওজন হবে আনুমানিক ৩৬ মণ। বিক্রির জন্য তিনি দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। গরুটি দেখতে বাড়িতে ভীড় করছেন অনেকেই।
একান্ত আলাপকালে কৃষক মোজাম্মেল হক বাবু জানান, পৈত্রিক সূত্রে তারা গরুর খামারী। ছোটবেলা থেকেই গরু লালন পালন করেন। চার বছর আগে তার নিজের খামারে গাভী থেকে একটি বাছুর হয়। সেটিকে তিনি খুব যত্ন করে লালন পালন করতে থাকেন তিনি। তার সঙ্গে স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনও পরিশ্রম করেন। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে ষাঁড়টি। সেই সাথে বড় হতে থাকে কৃষক দম্পতির স্বপ্ন। সেইজন্য আদর করে তারা গরুটির নাম রাখেন ‘স্বপ্নরাজ’।
কৃষক মোজাম্মেল হক বাবু জানান, চার বছরে স্বপ্নরাজ এখন বিশাল দেহের অধিকারী হয়েছে। ফিতা দিয়ে গরুর দৈর্ঘ্য ব্যসার্ধ মেপে ধারণা, স্বপ্নরাজের ওজন অন্তত ৩৬ মণ হবে। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। কোনো হাটে নিয়ে নয়, বাড়ি থেকেই বিক্রির আশা করছেন তিনি। গত বছর কোরবানির আগে স্বপ্নরাজের ওজন ছিল ২২/২৩ মণ। তখন দাম উঠেছিল ৬ লাখ টাকা। কিন্তু ওই দামে বিক্রি করেননি তিনি। তবে, এবার স্বপ্নরাজকে বিক্রির মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চান।
মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, স্বপ্নরাজকে লালন পালনে মোটাতাজা করতে তিনি কোনো মেডিসিন বা ইনজেকশন ব্যবহার করেননি, তিনবেলা সুষম খাবার দিয়েছেন। প্রতিদিন ১৭/১৮ কেজি খাবার খায় স্বপ্নরাজ। খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুট্টা, ছোলা, যব, খেসারী ডাল, ডাবরী, ধুইঞ্চা, মসুর ডাল। এগুলো ভাঙিয়ে গুড়া করে নেয়া হয়। তার সঙ্গে গমের ছাল, তিলা খৈল, ধানের গুড়া মিশিয়ে নিয়ে জাল দিয়ে ফুটিয়ে তিনবেলা খাওয়ানো হয়। তবে, এসব খাবারের পাশপাশি তিনবেলা নাস্তা হিসেবে কলা, আপেল, আঙুর সহ নানারকম ফলমুল খুব পছন্দ স্বপ্নরাজের।
চাটমোহর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী দৈনিক চলনবিলের কথা কে বলেন, বড় গরুর চাহিদা আগের মতো নেই। মোজাম্মেল হক বাবুর বড় ষাঁড় গরুর বিষয়টি জানা আছে। আশা করি তিনি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। কোরবানিকে সামনে রেখে আমরা খামারীদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে পাশে আছি। অনলাইনে গরু বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে উপজেলার খামারীদের গরুর ছবি ও তথ্য আপলোড করা হচ্ছে।