মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। প্রকৃতির ভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয় প্রতিটি ঋতু। কখনো মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টি, কখনো দাবদাহ, কখনো কনকনে শীত। ঋতু বদলের ধারায়। আর শুরু হয়েছে শীতকাল। হেমন্ত-শীতের এই মাঝামাঝি সময়ে এক অপরূপ রূপে সেজেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলায় মাঠে-মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙের সমারোহ। চারদিকে হলুদ গালিচা বিছিয়ে, এ যেন রূপকথার হলুদের এক বিশাল রাজ্য। যে রাজ্যে হলুদ রাজা-রানি আর হলুদ প্রজাদের বসবাস। দৃষ্টিনন্দন হলুদ সরিষার এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীদের পদচারণা এখন সরিষাখেতে। জমির আইলে বসে কেউ গল্প করছেন আবার কেউ মোবাইলে তুলছেন সেলফি। সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে মৌমাছির পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন মধু চাষিরাও। উপজেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে ঘরে উঠেছে আমন ধান। এখন সেই জমিতেই শোভা পাচ্ছে হলুদ বরণ সরিষা ফুল। বাতাসে ঢেউ তুলছে সেই সরিষা ক্ষেতে হলুদের বুকে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমটা এখন সরিষার। তাই গ্রামের মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ হয়েছে। হলুদে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের ক্ষেত। মাঠজুড়ে তাই ফুলের মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছিরা। মৌমাছির গুনগুনিয়ে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। একসঙ্গে ফোটা ফলগুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে। আর তা দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা।
ফসল হিসেবে খ্যাত এ ফসলের বাম্পার ফলনের হাতছানিতে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। অন্তর্বর্তী সময়ে চাষ করে উপযুক্ত মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা অধিক হারে সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছে। জানা গেছে, প্রতিবছর কার্তিক মাসের শেষের দিকে চাষ হয় সরিষা ফসল। পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এর কর্তন হয়। এ জমিতে সরিষা চাষের সময় যে সার প্রয়োগ করা হয় তা আবার ধান চাষের জন্য যথেষ্ঠ উপকার হয় বলে কৃষকরা জানান। কৃষকরা জানান উপজেলা কৃষি অফিসার তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন এবং যথেষ্ট সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।
ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় এবার সরিষা চাষে আগ্রহী হযয়েছে চাষিরা। এখন পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়ায় চাষিরা সরিষার ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।