শেখ সাখাওয়াত হোসেন (আল-চিশতী)
পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি
ইসালে ছাওয়াব মাহফিল আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে যুগ পরম্পরাগতভাবে। এই ইসালে ছাওয়াব মাহফিলের অর্থ সওয়াব পৌঁছানোর সম্মেলন। সাধারণত বছরে একবার এই মাহফিল বিশেষ করে বিভিন্ন পীর সাহেবের খানকা শরীফে অনুষ্ঠিত হয়। আবার কোথাও কোথাও উরস নামেও এই মিলন উৎসবেরও আয়োজন করা হয়।
পাবনার ঐতিহ্যবাহী খাজানগর সিদ্দিকিয়া দরবার শরীফে গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী হাসান সাঞ্জারী আল-আজমেরী (রাহঃ) এর স্বরণে বাৎসরিক পবিত্র ইছালে ছাওয়াব মাহফিল শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার (২৯ জানুয়ারী)। পাবনা জেলার সদর উপজেলার দ্বীপচর-রোড বলরামপুর খাজানগরে আনুষ্ঠানিকভাবে ১২তম পবিত্র ইছালে ছাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
মাহফিলের দিন বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষকে খাজানগর দরবারে ভিড় জমাতে থাকে মাহফিল প্রাঙ্গণে। এই মাহফিলে প্রতি ওয়াক্তই শত শত মানুষকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়। পীরের দরবারে বসে খান ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
উক্ত মাহফিলের সভাপতিত্ব করবেন ভারতের ফুরফুরা দরবার শরীফের খলিফা, হযরত নূর মোহাম্মদ আজাদ খাঁন চিশতী পীর সাহেব (প্রতিষ্ঠাতা: খাজানগর সিদ্দিকিয়া দরবার শরীফ ও মাদ্রাসা)
মাহফিলের প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, ভারতের ফুরফুরা শরীফের মোজাদ্দেদ জামানের আওলাদ হযরত মাওলানা সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী পীর সাহেব।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. স. ম আব্দুর রহিম পাকন।
প্রধান বক্তা হিসেবে আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আশরাফ আলীমুল্লাহ্ সিদ্দিকী পীর সাহেব, দ্বিতীয় বক্তা: হযরত মাওলানা মোঃ মজিবর রহমান জিহাদী (প্রধান খাদেম, এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফ), তৃতীয় বক্তা: হযরত মাওলানা ওমর ফারুক মোজাহেদী (খাদেম, বিশ্ব জাকের মঞ্জিল), চতুর্থ বক্তা: হযরত মাওলানা মুফতি রিয়াজ উদ্দীন ছালেহী (সহঃ সুপার, খাজানগর সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসা)।
এবারের ১২তম পবিত্র ইছালে ছাওয়াব মাহফিলের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পাবনা সদর উপজেলার খাজানগর সিদ্দিকিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব হযরত নূর মোহাম্মদ আজাদ খাঁন চিশতী।
হাফেজ মাওলানা আব্দুস সুবহান দৈনিক চলনবিলের কথা কে জানান, বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের ইতিহাসে ইসালে ছাওয়াব ও ওয়াজ মাহফিলের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। ইসালে ছাওয়াব ও ওয়াজ মাহফিলের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে খতমে কুরআন বহুবার করা হয়। এ ছাড়াও বাদ মাগরিব তরিকতের নিয়ম অনুযায়ী এক ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে যিকর-আসকার, তা’লীম-তালকীন প্রদান করা হয়। হাজার হাজার মানুষ যখন একযোগে অনুচ্চস্বরে আল্লাহ্ আল্লাহ্ নাম মুবারক যিকর করে, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ যিকর করে কিংবা জীবনের তাবত গোনাহর কথা স্মৃতিতে এনে তওবার ফয়েজ রপ্ত করে রব্বানা জলামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা ওয়া তারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসেরিন মনে মনে খেয়ালের সঙ্গে পাঠ করে এবং কাঁদতে থাকে তখন এক অনন্য পবিত্র পরিবেশ সমস্ত মাহফিল আঙ্গিনাজুড়ে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে।