পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পর্যবেক্ষণে এসেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) একটি প্রতিনিধিদল। আজ রোববার থেকে আগামী পাঁচ দিন দলটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে।
প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত কি না, তা পর্যালোচনা করতেই আইএইএ প্রতিনিধিদলটি রূপপুরে এসেছে। এটি তাদের মূল পর্যবেক্ষণ শুরুর আগের পর্যায়, যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রয়োজন হবে।
প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইএইএর ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি গতকাল শনিবার রাতে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালনা বিশেষজ্ঞ ইউরি মার্টিনেনকো। প্রতিনিধিদলটি আজ রোববার সকাল থেকে প্রকল্পের কাঠামোগত, প্রযুক্তিগত ও যন্ত্রপাতির প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। দলটি ১৩ মার্চ পর্যন্ত প্রকল্প এলাকার সবকিছু খুঁটিয়ে দেখবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জাহেদুল হাসান জানান, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য ধাপে ধাপে পরীক্ষা করতে হয়। একটি ধাপ সম্পূর্ণ করার পর পরের ধাপে যেতে হয়। প্রকল্পের ইউনিট-১–এর কাঠামোগত ও যন্ত্রপাতিসংক্রান্ত কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এটি চালুর চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আইএইএ এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করছে।
জাহেদুল হাসান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের আগে বিদ্যুৎ সঞ্চালনলাইন ও সংযোগব্যবস্থা পরীক্ষা করতে হবে। এটি শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। এ ছাড়া গ্রিড সংযোগ প্রস্তুত করতে হবে। এরপর জ্বালানি লোড ও রিঅ্যাক্টরে ফুয়েল অ্যাসেম্বলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও তিন মাস লাগবে। সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা সময় লেগে যাবে।
প্রসঙ্গত, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি।